পর পর দুই দফা শিলা বৃষ্টিতে টাঙ্গাইলের মধুপুরের অন্যতম লেবু চাষি মধ্যম আয়ের আব্দুল কদ্দুস মিয়ার ৮ বিঘার তিনটি লেবু বাগান একেবারে বিনষ্ট হয়েছে। এতে তিনি সর্বস্বান্ত হয়ে দেউলিয়া হওয়ার যোগাড়।
একাধিক ব্যাংক লোন, সার ঔষধের দোকান বাকি, অগ্রিম মহাজনের দেয়া অর্থ পরিশোধের কোন পথ না থাকায় চোখে অন্ধকার দেখছেন আলোকদিয়া ইউনিয়নের উত্তর লাউফুলা গ্রামের মৃত বাহাজ উদ্দিনের ছেলে আব্দুল কদ্দুস।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আব্দুল কদ্দুসের তিনটি বাগানের লেবুর ফলনের ৮০ শতাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। এ থেকে লাভের মুখ তো দূরের কথা আসল উঠে আসাই কঠিন। তবুও অবশিষ।টাংশের যতœ করছেন তিনি।
চাষি আব্দুল কদ্দুস জানান, বিগত ১৯ বছর ধরে তিনি লেবু চাষ করে সন্তানদের লেখাপড়াসহ সংসারের যাবতীয় ব্যয় চালান। এক মেয়ে বিয়ে দিয়েছেন। গত বছর তিনি ৬ মাসে চার লাখ টাকার লেবু বিক্রি করেন। লাভ ভালোই ছিল। এবার দুই লাখ টাকা ব্যয় করে ৮ বিঘা জমিতে লেবুর চাষ করেছিলেন। ফলন অনেকটা ভালোই হয়ে ছিল। কিন্তু গত ৩১ মার্চ প্রথম দফায় ঝড় ও শিলা বৃষ্টিতে লেবুর ফুল ও কচি ছোট লেবুর ব্যাপক ক্ষতি হয়। এর পর বাকি ফলনের যতœ নেয়া শুরু করার একদিন না যেতেই আবার মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) বিকেলের ব্যাপক শিলা বৃষ্টিতে লেবুর অবশিষ্ট ফলন পুরোটাই নষ্ট হয়ে যায়। এ ঘটনায় কদ্দুস দিগদ্বিগ হারিয়ে ফেলেছেন। দুশ্চিন্তায় খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন।
তার চিন্তা -এখন কিভাবে সংসার চলবে। একাধিক ব্যাংক থেকে লোন, মহাজনের কাছ থেকে অগ্রিম লেবুর জন্য নেয়া টাকা, লিজ নেয়া জমির টাকা কিভাবে শোধ করবেন। এবার তিনি ৮ বিঘা জমিতে দেশি কাগুজি লেবু ও এলাচ লেবু চাষ করেছেলিন। এ পর্য়ন্ত তার দুই লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। উৎপাদনে আসা পর্যন্ত আরও ৪০/৫০ হাজার টাকা ব্যয় হতো।
কদ্দুসের ধারণা ছিল- ৫ লাখ টাকার লেবু বিক্রি হতো। ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ লাভ আসতো। এ থেকে লোন পরিশোধের পাশাপাশি ৫ সদস্যের সংসারের খরচ যোগাড় হতো।
কুমুদিনি কলেজ পড়–য়া ও মধুপুর শহীদ স্মৃতি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ের খরচ যোগান হতো। কিন্তু এসব যেন বন্ধ হয়ে গেল দুই দফা শিলা বৃষ্টিতে। এখন তিনি কি করবেন ভেবে পাচ্ছেন না।
টাঙ্গাইলের মধুপুরে ঝড় ও শিলা বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে যাওয়া লেবু বাগানে অবশিষ্ট গাছের যত্ম নিচ্ছেন লেবু চাষি আব্দুল কদ্দুস। বাগানের পাশে দাঁড়িয়ে চিন্তিত কদ্দুস।
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি
আপনার মন্তব্য লিখুন...