১২:১২ পিএম | টাঙ্গাইল, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
প্রতিষ্ঠাতা মরহুম আব্দুল ওয়াহেদ মিয়া

চামড়ার বাজার মন্দা, ফরিয়াদের মাথায় হাত

স্টাফ রিপোর্টার | টাঙ্গাইল২৪.কম | রোববার, ২৬ আগস্ট ২০১৮ | |
, টাঙ্গাইল :

গত কয়েক বছরের তুলনায় এবারও কোরবানির পশুর চামড়ার বাজারে মন্দাভাব বিরাজ করছে টাঙ্গাইলে। এক প্রকার পানির দামে বিক্রি হচ্ছে গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়ার চামড়া। ফরিয়ারা বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা থেকে কম দামে কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ করলেও পাইকার ও আড়তদারদের কাছে সেই দামেও বিক্রি করতে পারছেন না। ফলে লোকশান গুনতে গিয়ে পথে বসার অবস্থা হয়েছে তাদের।

জানাগেছে, টাঙ্গাইল শহরে ১৫টি, কালিহাতী উপজেলার বল্লায় ১৪টি, এলেঙ্গায় ৬টি চামড়ার আড়ত রয়েছে। টাঙ্গাইলে গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া ইত্যাদি পশুর চামড়ার সবচেয়ে বড় হাট ঘাটাইলের পাকুটিয়া। প্রতি রোববার ভোর ৬টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত সারা বছর সেখানে চামড়ার হাট বসে। এ হাটে টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর, নেত্রকোনা ও সিরাজগঞ্জ জেলার ব্যবসায়ীরা চামড়া বিকিকিনি করেন।

সরেজমিনে রোববার পাকুটিয়া চামড়ার হাটে দেখা যায়, জেলার বৃহত্তর এ চামড়ার হাটে ঋষি, ফরিয়া ও ছোট ব্যবসায়ীদের মধ্যে চামড়া বিকিকিনি চলছে। হাটে আড়তদার ও ট্যানারির কোন প্রতিনিধিকে দেখা যায়নি। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন খুচরা বিক্রেতারা।

জেলার মৌসুমী (ফরিয়া) ব্যবসায়ীরা জানায়, এক লাখ থেকে ওপরে কেনা দামের ষাঁড়ের চামড়া গ্রাম-পাড়া ও মহল্লা  থেকে সর্বোচ্চ ৯০০ টাকা দিয়ে কিনেছেন। আর এর কমে কেনা ষাঁড়ের চামড়া কিনেছেন প্রতি পিস ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায়। ছাগলের চামড়া প্রতি পিস ৩০ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ টাকা দামে কিনেছেন। 

এলেঙ্গার চামড়া ব্যবসায়ী হুমায়ুন কবির জানান, তিনি ৪০০পিস গরু ও ৫৫০পিস ছাগলের চামড়া কিনে লবন মেখে হাটে এনেছেন। কিন্তু বড় কোন পাইকার ক্রেতা তার চামড়া দেখতে আসেনি। বিক্রি না হলে আবারও লবন মেখে রোদে শুকিয়ে প্রাথমিক প্রক্রিয়াজাত করে মাস খানেক পর আড়তদার বা ঢাকায় ট্যানারিতে বিক্রি করবেন। 

টাঙ্গাইল শহরের মো. জালাল মিয়া জানান, তিনি এবার ৪০টি গরুর চামড়া ও ৩০টি ছাগলের চামড়া কিনে বিক্রি করে কোনো রকমে চালান তুলেছেন। 

শেরপুরের ঝিনাইগাতির শুভাষ ঋষি ও নালিতাবাড়ীর রবি ঋষি জানান, তারা যৌথভাবে এলাকা থেকে ২৩০পিস ষাঁড়ের চামড়া কিনেছেন। লবন মেখে বিক্রি করতে হাটে এনেছেন। ছোট ছোট ত্রæটিযুক্ত (বাদ) ১০০টি চামড়া মূলধনে বিক্রি করেছেন। বাকি ভাল ও বড় চামড়াগুলো ২-১জন ক্রেতা খুব কম দাম বলায় বিক্রি করেন নি। 

বল্লার ব্যবসায়ী আবুল হাসেম জানান, সরকার চামড়া ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ। তিনি ৪০০ গরুর চামড়া কিনেছেন, দাম কম হওয়ায় বিক্রি করতে পারছেন না। 

তিনি বলেন, আওয়ামীলীগ সরকারের সময়ই ক্ষুদে চামড়া ব্যবসায়ীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। 

মধুপুরের ব্রজেন্দ্র ঋষি জানান, তিনি ৮০০-৯০০টাকায় ৩১০টি কোরবানির গরুর চামড়া কিনেছেন। সেগুলোতে লবন মেখে হাটে এনেছেন, কিন্তু বড় কোন পাইকার বা ট্যানারির কোন লোক হাটে না আসায় বিক্রি করতে পারছেন না। তিনি মনে করেন, আগামি হাটে ট্যানারি ও আড়তদাররা হাটে এলে চামড়ার ভালো দাম পাওয়া যাবে। সেজন্য লবন মেখে রোদে শুকিয়ে প্রাথমিক প্রক্রিয়াজাত করার কথা ভাবছেন তিনি। 

প্রায় একই অবস্থা নেত্রকোনার রামমোহন ঋষি, খগেন্দ্র কর্মকার; ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার আব্দুর রহিম মিয়া, রবি চন্দ্র দাস; শম্ভুগঞ্জের আব্দুল কুদ্দুছ, লাল মিয়া, টাঙ্গাইলের বল্লার দ্বীন ইসলাম, হযরত আলী, ইয়াছিন আলী সহ অনেকেরই। 

পাকুটিয়া চামড়ার হাটের ইজারাদার আব্দুল কাদের খান জানান, ৩৩ লাখ ২৫ হাজার ৭০০টাকায় তিনি এবার হাটের ইজারা নিয়েছেন। এর ওপর ভ্যাট-ট্যাক্স যোগ করে ইজারামূল্য পরিশোধ করেছেন।

তিনি জানান, প্রতি বছর লাখ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হলেও পাকুটিয়া হাটের কোন উন্নয়ন সরকারিভাবে হয়না। হাটে টয়লেট, পানীয় জলের কোন ব্যবস্থা নেই। তিনি মনে করেন, ফরিয়ারা বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জ-মহল্লা থেকে চামড়া কিনে হাটে আনে দু’টাকা লাভের আশায়। কোন কোন পাইকার বা আড়তদারের লোক বেশি লাভের লোভ দেখিয়ে ফরিয়াদের কাছ থেকে বাকিতে চামড়া নিয়ে আর দাম পরিশোধ করেনা। বছরের পর বছর এভাবে ঘুরতে হয়। তিনি নিজেও এপেক্স কোম্পানীর প্রতিনিধির কাছে ২০০৭ সালে ১৪ লাখ টাকার চামড়া বাকিতে বিক্রি করে অদ্যাবদি দাম পাননি বলেও জানান।

টাঙ্গাইল শহরের কান্দাপাড়ার চামড়া ব্যবসায়ী আক্তার হোসেন, পাইকারি ব্যবসায়ী মো. শাহজাদা, বল্লার আড়তদার নুরএলাহী, আবুল হাশেম, এলেঙ্গার শামছু মেম্বার, বেল্লাল মোল্লা, চান মোহন ঋষি জানান, ট্যানারি মালিকরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দাম কমালে বেশি দামে চামড়া বিক্রি করার কোন সুযোগ নেই। আগে যে চামড়া সাড়ে তিন হাজার টাকা বিক্রি হতো, সেই চামড়া এখন সর্বোচ্চ এক হাজার টাকা বিক্রি করতে হয়।

তারা আরো জানান, ট্যানারি ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে তারা চামড়া পানির দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। পাইকারী চামড়া ব্যবসায়ীরা ট্যানারি মালিকদের কাছে লাখ লাখ লাখ টাকা পাওনা রয়েছেন। সরকার ট্যানারি মালিকদের ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। অথচ ট্যানারি মালিকরা নানা অজুহাতে বাকিতে চামড়া কিনে টাকা পরিশোধের কথা মনেই রাখেন না। এভাবে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা যায় না।

উল্লেখ্য, এবার সরকারিভাবে কোরবানির গরুর চামড়া প্রতি বর্গফুট ঢাকায় ৫০ থেকে ৫৫ টাকা ও ঢাকার বাইরে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া সারাদেশে খাসির চামড়া প্রতি বর্গফুট ২০ থেকে ২২ টাকা ও বকরির চামড়া ১৫ থেকে ১৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

আপনার মন্তব্য লিখুন...

নাগরপুরে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার দিলেন তারানা হালিম বঙ্গবন্ধু সেতুতে একদিনে ৩কোটি টাকার টোল আদায় ''মানুষের কল্যাণে মানুষ'' ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ঈদ সামগ্র ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে ১৭ কিলোমিটার এলাকা ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং, ফুড সাইন্স এন্ড টেকনোলজি বা ফুড টেকনো ঈদের বাজার নিয়ে এবার বাড়ি ফিরবে না মেহেদী ৩২ ঘন্টায় বঙ্গবন্ধু সেতু পাড় হয়েছে প্রায় ৪২ হাজার পরিবহ পীর শাহজামান মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির উদ্যোগে ইফতার মাহফ দুঃস্থদের মাঝে টাঙ্গাইল মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ এর ঈদ ঈদের ছুটিতে মাভাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে বেড়েছে চোরের উপদ্রব জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা টাঙ্গাইল জেলা ইউনিটের ইফতার ও দো মির্জাপুরে অবৈধভাবে বালুকাটায় ৪ জনের জেল খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় মির্জাপুরে দোয়া ও ইফতার ম ঈদে এলেঙ্গা থেকে সেতু পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটারে যানজটের আশঙ কুরিয়ার সার্ভিসের কাউন্টার থেকে ১৬ বস্তা নকল সিগারেট জব

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি