০৭:২৬ পিএম | টাঙ্গাইল, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪
প্রতিষ্ঠাতা মরহুম আব্দুল ওয়াহেদ মিয়া

মর্মাহত, ব্যথিত, উপহাসিত...

তপু আহম্মেদ | টাঙ্গাইল২৪.কম | বুধবার, ২৫ অক্টোবর ২০১৭ | | ৪১৮
, টাঙ্গাইল :

শিশু বয়সে লেখা-লেখি মানে সাংবাদিকতার প্রশিক্ষণ গ্রহন করে সংবাদ লেখা শুরু করায় নামের সাথে একটি উপাধি আজও লেগে আছে। শিশু সাংবাদিক। এখনো অনেকেই দেখে বলে কি শিশু সাংবাদিক এখন বড় হয়ে গেছেন? সাংবাদিক হতে পেরেছি কিনা সেটা জানিনা, তবে আজও সংবাদ ও সাংবাদিকতা বিষয়ে শিখছি, শেখার চেষ্টা করছি। সুযোগ পেলেই এ বিষয়ে পড়ছি। নতুন নতুন বিষয় খুঁজছি। এটা বলতে পারেন এক ধরনের নেশা। সেই নেশা থেকেই আজও এ পেশায়। শ্রদ্ধেয় সিনিয়র সাংবাদিকদের মাঝে সবচেয়ে বেশি যারা আদর করেন, ¯েœহ করেন এবং ভালোবাসেন- তারা আজও নানা বিষয় নিয়ে শাসন করেন। যেটা আমার জন্য গর্বের। জীবন মানেই আপষ, কিন্তু জীবনের কিছু প্রশ্নে আপোষ করাটাও কি ঠিক?

আজ এরকমই একটি প্রশ্নের মুখে সারাটা দিন কেটেছে। ঢাকায় কাজে ব্যস্ত থাকলেও কিছুক্ষন পর পর ফোন গুলো পেয়ে মনে হচ্ছিল আজ সত্যিই আমরা হেরে গেছি। বুক ফেঁটে কান্না আসছিল, কিন্তু পরিবেশের কারণে সেটাও পারিনি। রাতে ঢাকা থেকে ফিরে আবারো পুরো বিষয়টি জানার চেষ্টা করেছি, কিন্তু যা জেনেছি তা কষ্টটাকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।

যে ঘটনাটি বলছি, সেটা হল- আজ মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির নামের বরাদ্ধকৃত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দেওয়া একটি কক্ষের উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল। কারণ আজ বিশ্ববিদ্যালয় ১৮তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন করেছে। প্রতিবছরই মহা ধুমধাম করেই দিনটি পালন করা হয়। প্রতি বছরের তুলনায় এ বছরের দিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ, শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সাংবাদিক সমিতি তথা ব্যক্তিগতভাবে আমার কাছে একটি আনন্দের দিন ছিল। কিন্তু সেই দিনটি একটি কালো দিন হিসেবেই আমার কাছে রয়ে গেল।

পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচী অনুযায়ী মাননীয় ভিসি মহোদয় কক্ষটি উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন। সেখানে টাঙ্গাইলের সিনিয়র অনেক সাংবাদিকও উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান ঠিক সময়টিতেই দাবার শেষ চালটা চাললেন বলে শুনেছি। তিনি ভিসি মহোদয়কে এমন কি বললেন, যে ভিসি মহোদয় এতদিনের তিলে তিলে গড়া বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির স্বপ্নটাকে সত্যি করতে গিয়ে না করেই চলে গেলেন। এমন কি সমস্যা ছিল? প্রশ্নটা সারা দিন মনে ঘোরপাক খেয়েছে। সিদ্ধান্ত নিয়েছি সরাসরি ভিসি স্যারের সাথে দেখা করে বিষয়টি নিয়ে মনে জমে থাকা কৌতুহলটা মেটাবো।

শুনেছি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ কক্ষটি বরাদ্ধ চাইছে। মাননীয় প্রক্টর মহোদয়ও নাকি তাদের সাথে তাল মিলিয়ে হ্যা, হ্যা বলে যাচ্ছে। কিন্তু ভিসি মহোদয় কক্ষটি সাংবাদিক সমিতিকে লিখিত ভাবে বরাদ্ধ দেওয়ার পরও কেন উদ্বোধন হলো না? তাহলে কি বিশ্ববিদ্যালয়কে সুনামের সাথে মাথা উচু করে তুলে ধরতে সাংবাদিক সমিতির কোন ভূমিকা ছিল না? নাকি কখনো আর প্রয়োজনই হবে না?

বিশ্ববিদ্যালয়টি ১৯৯৯ সালের ১২-ই অক্টোবর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর আধুনিক ও মানসম্মত উচ্চ শিক্ষা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর আমৃত্যু সংগ্রামের চারণভূমি টাঙ্গাইল জেলার সন্তোষে বাংলাদেশ সরকারের তৎকালীন ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন।

২০০১ সালের ১২ জুলাই জাতীয় সংসদে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন পাশ হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয় ২০০৩ সালের ২৫ অক্টোবর।

শিক্ষা কার্যক্রম শুরু পর থেকেই নানা সময়ে উত্তেজনাকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে। সে সময় থেকে এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়টির সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে টাঙ্গাইলের সাংবাদিকবৃন্দ এবং বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সদস্য সাংবাদিকরা আপ্রাণ চেষ্টা করে গেছে। অনেক কিছু দেখেও না দেখার মত করেই চালিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবুও বিশ্ববিদ্যালয় এর সুনাম যেন ক্ষুন্ন না হয়।

মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দল ও সরকার প্রধান যে বিশ্ববিদ্যালয় এর ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন সেই বিশ্ববিদ্যালয়েই আজ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দলের অঙ্গ সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ইচ্ছাপূরণ করতে সাংবাদিকদের অপমানিত করা হয়। যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ছিল, সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কমিটি হওয়ার পর কর্তৃপক্ষ এতটাই মেরুদন্ডহীন হয়ে পড়েছে যে, আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন আটকে যায় ছাত্রলীগের কারণে।

আজ মনে প্রশ্ন জাগে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কি এমন ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। যে ছাত্রলীগ সাংবাদিক সমাজের কন্ঠরোধ করার চেষ্টা করবে? যে ছাত্রলীগ তিলে তিলে গড়ে তোলা সাংবাদিক সমাজের স্বপ্ন এক মুহুর্তে ধ্বংশ যজ্ঞে পরিণত করবে?

বয়স কম, রাজনীতিও বুঝিনা হয়তো, তাই প্রশ্নগুলো অনেকের কাছেই অযোগ্য হতে পারে। তার পরও আজকের ঘটনায় অনেক কষ্ট পেয়েছি। অনেক কিছু লিখতে চেয়েছিলাম, কিন্তু আর কেন যেন লিখতে পারছি না।

তবে লিখতে চাই, আরো লিখবো... বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তে মনের মধ্যে যে কৌতুহল জমেছে তার সমাধান খুঁজে না পাওয়া পর্যন্ত এর পিছনের ঘটনা জানতে চাই, জানার চেষ্টা করবো।

মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর মহোদয়, এরপরও আপনাকে ধন্যবাদ জানাই।

আপনার প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। যারা সাংবাদিক সমিতি গড়ে তুলেছে। যারা আপনার কর্মকান্ড ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা উন্নয়ন পরিবর্তন সামনে আনছে। আজ আপনি তাদেরই মন ভেঙ্গে দিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক হিসেবে আপনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষার্থীর বাবার মত। বাবা হয়ে আজ আপনি নিজের সন্তানদের তিলে তিলে গড়া স্বপ্নটাকে গলা টিপে মেরে ফেললেন? আপনাকে দোষারোপ করার দুঃসাহস দেখাবো না। এরপরও আপনাকে ধন্যবাদ। আপনি হয়তো পিতার ভূমিকাটাই পালন করেছেন। পিতা হয়তো অনেক কিছুই সন্তানদের বলে না, কিন্তু করে দেখায়। জানি না আপনি এমন কি করতে চাচ্ছেন আপনার এই সন্তানদের জন্য?

আজকের ঘটনা শুধু আপনার সন্তানতূল্য শিক্ষার্থীদেরই মন ভাঙ্গেনি, ভেঙ্গেছে টাঙ্গাইলের আরো কয়েক ছোট বড় সংবাদকর্মীর। যারাও স্বপ্ন দেখেছিল দিনটি নিয়ে...

আপনার মন্তব্য লিখুন...

টাঙ্গাইলে ৯৬৬ বোতল ফেনসিডিল সহ আটক ৪ গোপালপুরে স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচির কার্ড বিতরণ সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সাথে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে মাভাবি মির্জাপুরে খেলাফত মজলিসের উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল স্বাধীনতা দিবসে টাঙ্গাইলে 'সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন'এর গোপালপুরে কয়েলের আগুন পুড়লো গোয়ালের ১৪টি প্রানী টাঙ্গাইলে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপিত মাভাবিপ্রবি "বঙ্গবন্ধু পরিষদ" কর্তৃক মহান স্বাধীনতা দিব মির্জাপুরে ছিনতাইকালে ২ পুলিশ সদস্য গ্রেফতার গোপালপুরের যথাযথ মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা দিবস পালিত কালিহাতীতে মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন টাঙ্গাইলে সাপ্তাহিক সমাজচিত্র পত্রিকার প্রতিষ্ঠা বার্ষি নাগরপুরে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালন মাভাবিপ্রবিতে মহান স্বাধীনতা দিবস পালিত ধনবাড়ীতে ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্সের উন্নয়নমূলক সভা

© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি

নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি