টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে লোকমান ফকির মহিলা ডিগ্রী কলেজে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন বিএ ইসলামী স্টাডিজ পরীক্ষায় স্বামীর প্রক্সি পরীক্ষা দিতে যাওয়ায় স্ত্রীকে এক বছরের কারাদন্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত।
এ কাজে সহায়তার জন্য অধ্যক্ষসহ চার শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া ও কেন্দ্র বাতিলের সুপারিশ করেছেন ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) এটিএম ফরহাদ চৌধুরী।
শনিবার দন্ডপ্রাপ্ত লায়লা খানমকে টাঙ্গাইল জেল হাজতে প্রেরণ করেছে ভূঞাপুর থানা পুলিশ।
জানা গেছে, গত শুক্রবার বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন বিএ ইসলামী স্টাডিজ পরীক্ষার ষষ্ঠ সেমিষ্টারের পরীক্ষার্থী ছিলেন ভূঞাপুর পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার রাশেদুল আলম তালুকদার। পরীক্ষা শুরু হওয়ার পরই খাতা ও প্রশ্নপত্র নিয়ে কলেজের পার্শ্ববর্তি কামরুল ইসলামের বাড়িতে স্বামীর হয়ে পরীক্ষা দেয় তার স্ত্রী লায়লা খানম।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে স্ত্রী লায়লা খানমকে হাতেনাতে আটক করেন ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার এটিএম ফরহাদ চৌধুরী। পরে ওই রাতেই ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে তাকে এক বছরের জেল ও এক হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এছাড়া পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থীদের বাড়তি সুবিধা দেয়ার কথা বলে প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৭শ টাকা করে নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
একজনের পরীক্ষা অন্যজন এবং পরীক্ষার খাতা ও প্রশ্নপত্র বাইরে নেয়ার কাজে সহায়তার জন্য কেন্দ্র সচিব ও লোকমান ফকির ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ হাসান আলীসহ চার শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়। অন্যদিকে অনিয়ম ও দূর্নীতির কারনে পরীক্ষা কেন্দ্র বাতিলের সুপারিশ করেন নির্বাহী ম্যাজেস্ট্রিট।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এটিএম ফরহাদ চৌধুরী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে অত্র কলেজে একটি জালিয়াত চক্র অধ্যক্ষ হাসান আলীর সহায়তায় কেন্দ্রে নানা অনিয়মের মাধ্যমে পরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে বলে অভিযোগ উঠে। এর প্রেক্ষিতে শুক্রবার বিকেলে পরীক্ষা চলাকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কলেজের পার্শ্ববর্তি একটি বাড়ি থেকে প্রশ্নপত্র ও খাতাসহ হাতেনাতে লায়লা খানমকে আটক করা হয়।
আটককৃত লায়লা খানম তার স্বামী রাশেদুল আলম তালুকদারের হয়ে প্রক্সি পরীক্ষা দিচ্ছিল। পরে তাকে এক বছরের জেল ও এক হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এছাড়াও প্রক্সি পরীক্ষায় সহায়তা এবং প্রশ্নপত্র ও খাতা বাহিরে নেয়ার অভিযোগে লোকমান ফকির ডিগ্রী কলেজের কেন্দ্র সচিব ও অধ্যক্ষ হাসান আলী, পরীক্ষায় দায়িত্বরত গ্রন্থাগারিক আশরাফ হোসেন, বাংলা বিভাগের প্রভাষক শায়লা আক্তার, শহিদ জিয়া মহিলা কলেজের প্রভাষক মিজানুর রহমান ও কষ্টাপাড়া আলিম মাদরাসার শিক্ষিকা রাবেয়া খাতুনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া পরীক্ষা কেন্দ্র বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পরীক্ষায় দায়িত্বরত শিক্ষক জানান, লোকমান ফকির ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষের সহায়তায় পরীক্ষার খাতা ও প্রশ্নপত্র বাহিরে পাঠানো হয়েছে।
ভূঞাপুর লোকমান ফকির ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ হাসান আলী জানান, প্রশ্নপত্র ও খাতা বাহিরে যাওয়ার বিষয়টি অবগত নই। তদন্ত করলে বের হয়ে আসবে কিভাবে সেগুলো বাহিরে গেল।
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত । এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
নির্মান ও ডিজাইন : মঈনুল ইসলাম, পাওয়ার বাই: জিরোওয়ানবিডি
আপনার মন্তব্য লিখুন...